সাধারণভাবে বলতে গেলে বিড়ালের লোম মানুষের ক্ষতি করেনা। তবে কিছু কিছু মানুষের বিড়ালের লোম, চামড়া ও লালার প্রতি সংবেদনশীলতা থাকে। সরাসরি বিড়ালের লোম হতে না হলেও কিছু কিছু মানুষের এতে ব্যাপক আকারে এলার্জি হতে পারে বিড়ালের খুশকি, লালা ও মূত্র হতে।
পর্যাপ্ত গোসল ও লোম আঁচড়ে দিলে বিড়ালের খুশকি ও লালার অবশিষ্টাংশ কমানো সম্ভব। নিয়মিত পরিচর্যায় ও বিড়ালের বাইরে গমন নিয়ন্ত্রণ করলে আপনি সহজেই বিড়ালকে সাথে নিয়ে থাকতে পারবেন। হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টজনিত কোনো উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কিভাবে লোম ও খুশকি নিয়ন্ত্রণ করবেনঃ
আপনি হয়ত আপনার কাপড়, সোফা কিংবা বিছানায় বিড়ালের লোম দেখে বিচলিত হতে পারেন, তবে জেনে রাখুন বিড়ালের লোমে তেমন কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। কিছু ক্ষেত্রে এলার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে মাত্র। আর বিড়ালের লোম থাকলে সেখানে বিড়ালের খুশকিও থাকবে।
বিড়ালের লোম হতে পরিত্রাণের আপাতদৃষ্টিতে কোন উপায় নেই। বিড়াল থাকলে জামাকাপড় ও সোফায় লোম থাকবেই। তবে আপনি এদের লোম আঁচড়ে দিয়ে এদের লোম ছড়ানো কিছুটা কমাতে পারেন। প্রতিদিন বিড়ালকে ব্রাশ দিয়ে ঘসে দিতে পারেন। এতেকরে এদের আলগা লোমগুলো উঠে আসবে। আপনার বিড়ালকে প্রতি চার সপ্তাহ অন্তর অন্তর একবার গোসল করান। গোসল করানোর সময় বিড়ালের শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এতে বিড়ালের খুশকি অনেকাংশেই দূর হবে। আর প্রতি সপ্তাহে নরম কাপড় হাল্কা গরম পানিতে চুবিয়ে বিড়ালের গা মুছে দিন। এতেও অতিরিক্ত খুশকি দূর হয়। এর পাশাপাশি আপনার বিড়ালকে মানসম্মত খাবার ও ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার খাওয়াতে পারেন। এতেকরে এদের চামড়া সুস্থ থাকবে।
কখনই মানুষের খুশকিনাশক শ্যাম্পু ও ডিটারজেন্ট কিংবা কুকুরের শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। এগুলোতে বিড়ালের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে। আর বিড়ালের ত্বক রাসায়নিকের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। যেমন বিড়ালের জন্য টি ট্রি অয়েল বেশ বিষাক্ত।
কখন বুঝবেন যে বিড়ালের কারণে আপনার এলার্জি হয়েছেঃ
মৃদু অবস্থায় অনেকের হাঁচি আসে, চোখ জ্বালা করে। পরিস্থিতি গুরুতর হলে আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁপাতে পারেন। তবে এই ধরনের প্রতিক্রিয়া ঠিক তখনি ঘটে যখন একজন সংবেদনশীল মানুষ বিড়াল থাকার ঘরে প্রবেশ করেন। সেখানে বিড়াল থাক বা না থাক , বিড়ালের লোম দেখলেই তাদের এলার্জির প্রতিক্রিয়া শুরু হতে পারে। তবে এলার্জির ঠিক কোন কোন লক্ষণ দেখা দেয় তা সঠিক বলা সম্ভব না কারণ একই সাথে অনেক ধরনের এলার্জির লক্ষণই দেখা দিতে পারে।বিড়াল জনিত এলার্জি শনাক্ত করণের সবচেয়ে সঠিক উপায় হল চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ও এলার্জি টেস্ট করানো।
কিভাবে বিড়ালের প্রতি সংবেদনশীল মানুষদের ঘরে রাখবেনঃ
বিড়ালকে এলার্জি জনিত সংবেদনশীল মানুষের থেকে দূরে রাখতে বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। সে ব্যক্তি যদি আপনিই হন তবে সম্ভব হলে অন্য কারো দ্বারা বিড়ালের গোসল করান। বিড়ালকে ধরার পর ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন। প্রতিদিন নিয়মিত সোফা ও কাপড়ে যেখানে বিড়ালের লোম থাকে তা ঝেড়ে নিন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করতে পারেন। বাসায় পাপোশ কিংবা কার্পেট থাকলে তা ভালভাবে ডিটারজেন্ট মিশ্রণ দিয়ে মুছে নিন। সম্ভব হলে বাসায় এয়ার পিউরিফায়ার রাখতে পারেন।
পৃথকীকরণ পদ্ধতিঃ
যদিও এটা বেশ কঠিন একটি কাজ তবুও বিড়ালকে যদি পারেন নির্দিষ্ট কোনো ঘরে ঢুকতে বাধা দিন। আর এটিই বিড়ালের প্রতি সংবেদনশীল মানুষকে সবচেয়ে বড় স্বস্তি দিবে। বেড্রুমের দরজা সবসময় বন্ধ করে রাখুন যাতে বিড়াল কোনোক্রমেই সেই ঘরে ঢুকতে না পারে। বিড়ালের লিটার বক্স যথাসম্ভব সেই ঘোর থেকে দূরে রাখুন।